Friday, 17 October 2014

চা বাগানের ভুত

বাংলাদেশের এই
পূণ্যভূমিতে চা বাগানের
সংখ্যা প্রায়
১৫০ টিরও বেশী ।এত এত
ঘটনা রয়েছে এসব
চা বাগানকে কেন্দ্র
করে যে বলে শেষ
করা যাবে না ।যারা ঐসব
চা বাগানে বাস
করেন,তারা তো এসব
ঘটনা জানেনই,যারা বিভিন্ন
জেলা হতে চা বাগানে চাকুরীর
সুবাদে যান,তারাও এসব
ঘটনা শুনে থাকেন,অনেক অভিজ্ঞতাও হয়
তাদের সাথে ।
বলা হয়ে থাকে যে,চা বাগানে চাকুরী করলে এসব
ঘটনার সাথে এডজাষ্ট
করে নিতে না পারলে হয় আপনি পাগল
হয়ে যাবেন,আর
নয়তো আপনাকে চাকুরী ছেড়ে দিয়ে চলে আসতে হবে ।
এক চা বাগানে প্রায়ই রাতের
বেলা একটা মেয়েকে চা পাতা তুলতে দেখা যায়
।মেয়েটা অল্প বয়সী,খুবই
সুন্দরী এবং মায়াবী চেহারার ।ঐ
চা বাগানে যারা কাজ
করে,তারা প্রায়
সবাই মেয়েটাকে দেখে ।কিন্তু
মেয়েটার
কাছে যাওয়ার সাহস কারোরই হয়
না ।
চা বাগানে যারা পাহারা দেয়,
তাদেরকে চৌকিদার বলে ।এক নতুন
চৌকিদারের দায়িত্ব পড়লো ঐ
চা বাগানে এক
রাতে পাহারা দেয়ার
জন্য ।গভীর রাতে টর্চের আলোয়
চৌকিদার
দেখলো,মেয়েটা চা পাতা তুলছে ।
চৌকিদার
এগিয়ে গেলো মেয়েটার
কাছে ।ধমক দিয়ে বললো,“এই,এত
রাতে এইখানে কি ?”মেয়েটার চোখ
মুখ
শক্ত হয়ে গেল ।হিস হিস
কন্ঠে চৌকিদারকে বললো ,”এটা আমার
চা বাগান ।এখানে আমার
যা খুশি,তাই
করবো ।কেউ
আমাকে বাধা দিতে পারবেনা ।”মেয়েটার
চেহারা বদলাতে লাগলো ।
কিশোরী মেয়ে থেকে সে একটা বিভত্স
বৃদ্ধাতে পরিনত হলো ।গালে বসন্তের
দাগ
।মুখ থেকে লালা পড়ছে।চৌকিদার
এইরূপ
দেখেই অজ্ঞান হয়ে পড়লো ।কিছুদিন
পর
প্রচন্ড কষ্ট ভোগ
করে চৌকিদারটা মারা যায় ।এক
ছেলে রাতের
বেলা একা চা বাগানের
ভিতর দিয়ে আসছিলো ।হঠাৎ সে লক্ষ্য
করে যে,একটা কালো কুকুর বাম পাশ
থেকে তাকে পাশ কাটাতে চাইছে ।
ছেলেটা এই ব্যাপার
টা জানতো যে,সে যদি এটাকে বাম
পাশ
থেকে যেতে দেয়,তাহলে তার ভয়াবহ
বিপদ হতে পারে ।সে এও
বুঝতে পেরেছিলো যে এটা মোটেও
কোন
কুকুর নয় ।তাই সে কিছুতেই
ওটাকে যেতে দিলো না ।বাড়ির
কাছাকাছি আসার পর একটা ভয়ানক
গোঙানির শব্দ
পেয়ে ছেলেটা পিছনে তাকিয়ে দেখলো,কুকুরটা দুই
পায়ে ভর দিয়ে দাড়িয়ে ঐ
গোঙানির
শব্দ করছে ।যেন ব্যর্থ
আক্রোশে ফুঁসছিলো ।ছেলেটার
চোখের
সামনে ঐটা হঠাৎ মিলিয়ে যায়
এবং ছেলেটাও এই ব্যাপার
দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে ।এরপর
টানা ১৫দিন
ছেলেটা কালাজ্বরে ভুগেছিলো ।
১০৪
ডিগ্রি জ্বর ।কুকুরটা কে পাশ
কাটাতে না দেয়ার অপরাধে !
চা বাগানের আশেপাশে অনেক ছোট
ছোট ঝর্ণা আছে ।স্থানীয় ভাষায়
ওগুলোকে ছরা বলে ।অনেকেই
নাকি রাতের বেলা দেখেছে যে,এক
হিন্দু বউ,কপালে সিঁদুর,লাল পাড়
দেয়া সাদা শাড়ী পড়ে ছরার একপাশ
থেকে অন্যপাশে পার হয় এবং তারপর
সাথে সাথে অদৃশ্য হয়ে যায় !
চা বাগানে রাতের
বেলা কারো হেটে বেড়ানোর শব্দ
পাওয়া যায় ।অনেকেই কোন
নির্দিষ্ট
আকৃতি নেই,এমন ধরনের
ছায়া কে চা বাগানে ঘুরে বেড়াতে দেখেছে ।
অন্ধকারে তাদের দেখা যায় না ।
চাঁদের
আলো থাকলে মাটিতে এসব
ছায়া কে দেখা যায় ।প্রায়ই গভীর
রাতে চা বাগান থেকে চিত্কার
ভেসে আসে,”সাআআআবধান !!”কাকে সাবধান
করে দেয়া হয়,কি জন্য? কেউ
জানে না ।
ভৌতিকতার দিক থেকে সিলেট
যে কারণে বিখ্যাত
হয়ে আছে,সে কথায়
আসছি এখন ।ভারতের বর্ডারের
কাছে একটা ঘটনা ঘটেছিল ।ঢাকার
মিরপুরেও নাকি একই
ঘটনা ঘটেছে বলে শোনা যায় ।
কি একটা অদ্ভূত জন্তু এসে নাকি ছোট
বাচ্চাদের মাথা,গলা ,পেট পর্যন্ত
খেয়ে ফেলে!!!
সিলেটে এটা নাকি নৈর্মিত্তিক
ব্যাপার!!!সিলেটের চা বাগানের
লোকেদের কাছে যদি এই
ব্যাপারে জানতে চান,তো তারা আপনাকে একটা নামই
বলবে । আর সেটা হলো”জুজু!” এই জুজু
ওইজা বোর্ডের ডেভিল জোজো নয় ।
এটা সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস ।
ওইজা বোর্ডের জোজোর
কথা না অনেক
মানুষ চিনে অথবা জানে ।কিন্তু
সিলেটের চা বাগান গুলোতে জুজুর
জনপ্রিয়তা দেখার মত !!!জুজু লোমশ
একটা জীব ।এর চোখ লাল টকটকে ।
ছোট
বাচ্চাদের দিকেই এর নজর বেশী ।এক
মহিলা তার বাচ্চা কে ঘুম
পাড়িয়ে আরেক
রূমে টিভি দেখতে চলে গেল ।কাজের
মেয়েটা বাচ্চার রূমে এসেই
গলা ফাটিয়ে একটা চিত্কার দিল ।
মহিলা দৌড়ে রূমে এসে দেখলেন
কাজের
মেয়েটা অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে,আর
লোমশ একটা জীব
বাচ্চাটাকে জানালা দিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে ।
বাচ্চাটা হাত পা ছোড়াছুড়ি করছিল

মহিলাকে দেখেই
জীবটা বাচ্চাটাকে ফেলে লাফ
দিয়ে চা বাগানের ভিতর
হারিয়ে যায় ।
এক বাচ্চা কোন কারণে খাবার
খেতে চাইছিলনা ।তার
মা তাকে জোর
করে খাওয়াতে চেষ্টা করছিলেন ।এক
পর্যায়ে মহিলা বললেন ,”তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও
না হলে জুজু আসবে ।”কাছেই
একটা চা বাগান থেকে একটা শব্দ
মহিলা শুনতে পেলেন ,”জুজু আসবে।”
মহিলা এটাকে পাত্তা দিলেন না ।
ভাবলেন যেমনের ভুল ।খানিক পর
বাচ্চাটা আবার বাহানা শুরু
করলে মহিলা বিরক্ত হয়ে বললেন ,”এই
খাও বলছি ।জুজু আসবে কিন্তু
বলে দিলাম
।” এবার মহিলা আগের বারের মতই
কিন্তু
অনেক কাছে শব্দ শুনলেন যে,” জুজু
আসছে !” মহিলা ভয় পেয়ে গেলেন ।
ব্যাপারটা তার স্বামীকে বলার জন্য
বাচ্চাটাকে ডাইনিং রুমে বসিয়ে অন্য
রুমে গেলেন ।তিনি যখনই তার
স্বামীকে এই শব্দের
ব্যাপারটা বলছিলেন,হঠাৎ
তারা দুজনই
শেষ বারের মত শব্দটা শুনলেন ।এইবার
শব্দটা ছিল এরকম : “জুজু খাচ্ছে !” “জুজু
খাচ্ছে!”
তারা দৌড়ে ডাইনিং রুমে গেলেন

গিয়ে দেখলেন,কালো লোমশ
একটা প্রাণী জানালা দিয়ে পালাচ্ছে ।
আর তাদের বাচ্চা ?
বাচ্চাটাকে অর্ধেক
খেয়ে ফেলা হয়েছে ! জুজু
নিয়ে চা বাগানের এটাই
সবচেয়ে বিখ্যাত ঘটনা ।
চা বাগানে প্রায়ই কাজ করার সময়
ছোট
ছোট বাচ্চা নিখোঁজ হয় ।
পরে তাদের
মাথা কাটা লাশ পাওয়া যায় ।কার
কাজ
কেউই জানে না ।আপনার ঘরেও
হয়তো ছোট বাচ্চা আছে ।তাদের
আপনি জুজুর ভয় দেখান
ভালো কথা,কিন্তু
জুজু
থেকে তারা নিরাপদে আছে তো ?
চোখের সামনে কচর কচর
করে একটা বাচ্চাকে খেয়ে ফেলতে দেখাটা কেমন
লাগবে একবার ভাবুন তো?????

No comments:

Post a Comment