Wednesday, 29 October 2014

নদীর রহস্য

কর্ণফুলিতে সন্ধ্যার আগে নদীর
পাড়ে এসে গোসল করা নিষেধ।
এই
কথা যারা মানেনি তাদেরকেই
নদী টেনে নিয়ে গেছে।
এবার বিস্তারিত আমার
খালাতো বোনের শিক্ষক
ওকে যখন বলে ঘটনাটি ঠিক এরকম,
"আমি তখন ম্যাট্রিক দেবো,
বাবা শিকলবাহা তাপবিদ্যুৎ এর
প্রকৌশলী, নদীর পাড়ে আমাদের
বিশাল কোয়ার্টার। আমাদের
সার্বক্ষণিক একজন
বুয়া থাকতো যিনি তাঁর
ছেলে সবুজসহ আমাদের
ঘরে থাকতেন। একদিন
বিকালে সবুজ তার সহপাঠি ও
সহপাঠি'র ছোটভাই সহ
নদীতে নামে। আধাঘন্টা যাবৎ
পানিতে দাপাদাপি করার পর
হঠাৎ সবুজ টের পায়
তাকে কিসে যেন
পানিতে টানছে। সবুজের
সহপাঠি শত চেষ্টা করেও
সবুজকে ধরে রাখতে পারলো।
নিজের
ছোটভাইকে পাড়ে পাঠিয়ে দিয়ে এবার
ছেলেটি সবুজকে খুঁজতে পানিতে ডুব
দেয়, সেও ফেরে না। অনেক
কান্নাকাটির রোল পড়ে যায়
আমাদের ঘরে। দুদিন পর আমাদের
এলাকার মসজিদের ইমাম
স্বপ্নে দেখেন আগামী দুপুর ১২টায়
ছেলে দুটির লাশ পানির উপর
উঠবে। পরদিন জানাজানি হওয়ার
সাথে সাথে ১২টার আগেই প্রচুর
মানুষ জড়ো হয়ে যায়।
এবং সত্যি সত্যি লাশ
ভেসে ওঠে সবুজের, কিন্তু লাশ
ভেসে ওঠার
নিয়মটা ছিলো অদ্ভূত। লাশটা ভূশ
করে প্রায় ১০ফুট
উঁচুতে ভেসে প্রায় ৩,৪সেকেন্ড
স্থায়ী ছিলো আকাশে এবং মানুষজনের
মাঝে 'হো' করে একটা গুঞ্জন হয়।
আজো জানা যায় নি এ জায়গার
রহস্য কি...

Friday, 17 October 2014

চা বাগানের ভুত

বাংলাদেশের এই
পূণ্যভূমিতে চা বাগানের
সংখ্যা প্রায়
১৫০ টিরও বেশী ।এত এত
ঘটনা রয়েছে এসব
চা বাগানকে কেন্দ্র
করে যে বলে শেষ
করা যাবে না ।যারা ঐসব
চা বাগানে বাস
করেন,তারা তো এসব
ঘটনা জানেনই,যারা বিভিন্ন
জেলা হতে চা বাগানে চাকুরীর
সুবাদে যান,তারাও এসব
ঘটনা শুনে থাকেন,অনেক অভিজ্ঞতাও হয়
তাদের সাথে ।
বলা হয়ে থাকে যে,চা বাগানে চাকুরী করলে এসব
ঘটনার সাথে এডজাষ্ট
করে নিতে না পারলে হয় আপনি পাগল
হয়ে যাবেন,আর
নয়তো আপনাকে চাকুরী ছেড়ে দিয়ে চলে আসতে হবে ।
এক চা বাগানে প্রায়ই রাতের
বেলা একটা মেয়েকে চা পাতা তুলতে দেখা যায়
।মেয়েটা অল্প বয়সী,খুবই
সুন্দরী এবং মায়াবী চেহারার ।ঐ
চা বাগানে যারা কাজ
করে,তারা প্রায়
সবাই মেয়েটাকে দেখে ।কিন্তু
মেয়েটার
কাছে যাওয়ার সাহস কারোরই হয়
না ।
চা বাগানে যারা পাহারা দেয়,
তাদেরকে চৌকিদার বলে ।এক নতুন
চৌকিদারের দায়িত্ব পড়লো ঐ
চা বাগানে এক
রাতে পাহারা দেয়ার
জন্য ।গভীর রাতে টর্চের আলোয়
চৌকিদার
দেখলো,মেয়েটা চা পাতা তুলছে ।
চৌকিদার
এগিয়ে গেলো মেয়েটার
কাছে ।ধমক দিয়ে বললো,“এই,এত
রাতে এইখানে কি ?”মেয়েটার চোখ
মুখ
শক্ত হয়ে গেল ।হিস হিস
কন্ঠে চৌকিদারকে বললো ,”এটা আমার
চা বাগান ।এখানে আমার
যা খুশি,তাই
করবো ।কেউ
আমাকে বাধা দিতে পারবেনা ।”মেয়েটার
চেহারা বদলাতে লাগলো ।
কিশোরী মেয়ে থেকে সে একটা বিভত্স
বৃদ্ধাতে পরিনত হলো ।গালে বসন্তের
দাগ
।মুখ থেকে লালা পড়ছে।চৌকিদার
এইরূপ
দেখেই অজ্ঞান হয়ে পড়লো ।কিছুদিন
পর
প্রচন্ড কষ্ট ভোগ
করে চৌকিদারটা মারা যায় ।এক
ছেলে রাতের
বেলা একা চা বাগানের
ভিতর দিয়ে আসছিলো ।হঠাৎ সে লক্ষ্য
করে যে,একটা কালো কুকুর বাম পাশ
থেকে তাকে পাশ কাটাতে চাইছে ।
ছেলেটা এই ব্যাপার
টা জানতো যে,সে যদি এটাকে বাম
পাশ
থেকে যেতে দেয়,তাহলে তার ভয়াবহ
বিপদ হতে পারে ।সে এও
বুঝতে পেরেছিলো যে এটা মোটেও
কোন
কুকুর নয় ।তাই সে কিছুতেই
ওটাকে যেতে দিলো না ।বাড়ির
কাছাকাছি আসার পর একটা ভয়ানক
গোঙানির শব্দ
পেয়ে ছেলেটা পিছনে তাকিয়ে দেখলো,কুকুরটা দুই
পায়ে ভর দিয়ে দাড়িয়ে ঐ
গোঙানির
শব্দ করছে ।যেন ব্যর্থ
আক্রোশে ফুঁসছিলো ।ছেলেটার
চোখের
সামনে ঐটা হঠাৎ মিলিয়ে যায়
এবং ছেলেটাও এই ব্যাপার
দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে ।এরপর
টানা ১৫দিন
ছেলেটা কালাজ্বরে ভুগেছিলো ।
১০৪
ডিগ্রি জ্বর ।কুকুরটা কে পাশ
কাটাতে না দেয়ার অপরাধে !
চা বাগানের আশেপাশে অনেক ছোট
ছোট ঝর্ণা আছে ।স্থানীয় ভাষায়
ওগুলোকে ছরা বলে ।অনেকেই
নাকি রাতের বেলা দেখেছে যে,এক
হিন্দু বউ,কপালে সিঁদুর,লাল পাড়
দেয়া সাদা শাড়ী পড়ে ছরার একপাশ
থেকে অন্যপাশে পার হয় এবং তারপর
সাথে সাথে অদৃশ্য হয়ে যায় !
চা বাগানে রাতের
বেলা কারো হেটে বেড়ানোর শব্দ
পাওয়া যায় ।অনেকেই কোন
নির্দিষ্ট
আকৃতি নেই,এমন ধরনের
ছায়া কে চা বাগানে ঘুরে বেড়াতে দেখেছে ।
অন্ধকারে তাদের দেখা যায় না ।
চাঁদের
আলো থাকলে মাটিতে এসব
ছায়া কে দেখা যায় ।প্রায়ই গভীর
রাতে চা বাগান থেকে চিত্কার
ভেসে আসে,”সাআআআবধান !!”কাকে সাবধান
করে দেয়া হয়,কি জন্য? কেউ
জানে না ।
ভৌতিকতার দিক থেকে সিলেট
যে কারণে বিখ্যাত
হয়ে আছে,সে কথায়
আসছি এখন ।ভারতের বর্ডারের
কাছে একটা ঘটনা ঘটেছিল ।ঢাকার
মিরপুরেও নাকি একই
ঘটনা ঘটেছে বলে শোনা যায় ।
কি একটা অদ্ভূত জন্তু এসে নাকি ছোট
বাচ্চাদের মাথা,গলা ,পেট পর্যন্ত
খেয়ে ফেলে!!!
সিলেটে এটা নাকি নৈর্মিত্তিক
ব্যাপার!!!সিলেটের চা বাগানের
লোকেদের কাছে যদি এই
ব্যাপারে জানতে চান,তো তারা আপনাকে একটা নামই
বলবে । আর সেটা হলো”জুজু!” এই জুজু
ওইজা বোর্ডের ডেভিল জোজো নয় ।
এটা সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস ।
ওইজা বোর্ডের জোজোর
কথা না অনেক
মানুষ চিনে অথবা জানে ।কিন্তু
সিলেটের চা বাগান গুলোতে জুজুর
জনপ্রিয়তা দেখার মত !!!জুজু লোমশ
একটা জীব ।এর চোখ লাল টকটকে ।
ছোট
বাচ্চাদের দিকেই এর নজর বেশী ।এক
মহিলা তার বাচ্চা কে ঘুম
পাড়িয়ে আরেক
রূমে টিভি দেখতে চলে গেল ।কাজের
মেয়েটা বাচ্চার রূমে এসেই
গলা ফাটিয়ে একটা চিত্কার দিল ।
মহিলা দৌড়ে রূমে এসে দেখলেন
কাজের
মেয়েটা অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে,আর
লোমশ একটা জীব
বাচ্চাটাকে জানালা দিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে ।
বাচ্চাটা হাত পা ছোড়াছুড়ি করছিল

মহিলাকে দেখেই
জীবটা বাচ্চাটাকে ফেলে লাফ
দিয়ে চা বাগানের ভিতর
হারিয়ে যায় ।
এক বাচ্চা কোন কারণে খাবার
খেতে চাইছিলনা ।তার
মা তাকে জোর
করে খাওয়াতে চেষ্টা করছিলেন ।এক
পর্যায়ে মহিলা বললেন ,”তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও
না হলে জুজু আসবে ।”কাছেই
একটা চা বাগান থেকে একটা শব্দ
মহিলা শুনতে পেলেন ,”জুজু আসবে।”
মহিলা এটাকে পাত্তা দিলেন না ।
ভাবলেন যেমনের ভুল ।খানিক পর
বাচ্চাটা আবার বাহানা শুরু
করলে মহিলা বিরক্ত হয়ে বললেন ,”এই
খাও বলছি ।জুজু আসবে কিন্তু
বলে দিলাম
।” এবার মহিলা আগের বারের মতই
কিন্তু
অনেক কাছে শব্দ শুনলেন যে,” জুজু
আসছে !” মহিলা ভয় পেয়ে গেলেন ।
ব্যাপারটা তার স্বামীকে বলার জন্য
বাচ্চাটাকে ডাইনিং রুমে বসিয়ে অন্য
রুমে গেলেন ।তিনি যখনই তার
স্বামীকে এই শব্দের
ব্যাপারটা বলছিলেন,হঠাৎ
তারা দুজনই
শেষ বারের মত শব্দটা শুনলেন ।এইবার
শব্দটা ছিল এরকম : “জুজু খাচ্ছে !” “জুজু
খাচ্ছে!”
তারা দৌড়ে ডাইনিং রুমে গেলেন

গিয়ে দেখলেন,কালো লোমশ
একটা প্রাণী জানালা দিয়ে পালাচ্ছে ।
আর তাদের বাচ্চা ?
বাচ্চাটাকে অর্ধেক
খেয়ে ফেলা হয়েছে ! জুজু
নিয়ে চা বাগানের এটাই
সবচেয়ে বিখ্যাত ঘটনা ।
চা বাগানে প্রায়ই কাজ করার সময়
ছোট
ছোট বাচ্চা নিখোঁজ হয় ।
পরে তাদের
মাথা কাটা লাশ পাওয়া যায় ।কার
কাজ
কেউই জানে না ।আপনার ঘরেও
হয়তো ছোট বাচ্চা আছে ।তাদের
আপনি জুজুর ভয় দেখান
ভালো কথা,কিন্তু
জুজু
থেকে তারা নিরাপদে আছে তো ?
চোখের সামনে কচর কচর
করে একটা বাচ্চাকে খেয়ে ফেলতে দেখাটা কেমন
লাগবে একবার ভাবুন তো?????

Thursday, 16 October 2014

আত্না

আমার রুমের জানালাটা ঠিক
পাশের
এক বিল্ডিং এর গা ঘেঁষে।।
আগে যখন
বি এন পি সরকার ছিল তখন এই বাড়ির
ছাদে এনে অনেক
লোককে পিটানো হয়েছে।।
অনেকেই
বলে এমনকি খুনও নাকি হয়েছে।। যাই
হোক, আমার জানলায় প্রায় রাতেই
কে যেনও ঠক ঠক করতো।। আনুমানিক
রাত ৩ টার
দিকে আওয়াজটা পাওয়া যেতো।।
আমার প্রতিদিন ঘুম ভাঙত না,
তবে ঘুম
ভেঙ্গে গেলে আমি সাংঘাতিক
ভয়
পেতাম।। আমার কথা বিশ্বাস
না হওয়ায় আমার বড় ভাই নিজেও
প্রায় ২ মাস একসাথে আমার
বিছানায় থাকতো।। সেইসময়ও
আওয়াজটা হতো।। এবং আমরা দুজনেই
আওয়াজটা পেতাম।। কোনোদিন
খুলে দেখার সাহস হয় নি তখনো।।
এবং সবচেয়ে আশ্চর্যকর ব্যাপার হল,
আওয়াজটা ঠিক রাতে ৩টার পর পর
হতো এবং ১৫ মিনিট পর
থেমে যেতো।।
অবস্থা বেগতিক দেখে আমার
মা উনার ছোট ভাইকে খবর দেন।।
অর্থাৎ আমার ছোট মামা।।
এখানে বলে রাখা ভালো,
আমরা কয়েকবার
কে কে বলে চিৎকার
করেছি, কিন্তু কোনও সাড়া শব্দ
পাইনি।। তাই পাছে কোনও ক্ষতি হয়
এই ভয়ে আমরা জানালা খুলতাম না।।
আর আমার বাবা প্রায় সময়েই
বাড়ির
বাইরে থাকতেন।। শুধু
বাড়িতে আমি,
মা, আর আমার ভাই।।
একা বাড়িতে এমন রিস্ক
নিয়ে রাতের
বেলা জানালা খোলার সাহস
কারো ছিল না।।
সে যাই হোক, আমার ছোট
মামা আসার পর উনাকে আমার
সাথে থাকতে দেয়া হল।। সেদিন
রাতে আমরা খাওয়া দাওয়া করে ৩টার
দিকে ঘুমিয়ে পড়ি।। আমার কিছুতেই
ঘুম আসছিলো না।। ছোট
মামা নিজে খুবই সাহসী লোক।।
উনাকে বলা হয়েছিলো জানালা নক
করার ব্যাপারে।। কিন্তু
উনি হেসে উড়িয়ে দেন।। যাই
হোক,
রাত ৩ টার দিকে কোনও এক
কারণে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়।।
অনুভব
করি সাড়া গা ঘামে ভিজে গেছে।।
মনে হয় কারেন্ট নেই।।
আমি ধাক্কা দিয়ে মামাকে দেখার
চেষ্টা করি।। কিন্তু
মামা পাশে নেই।। আমার বুকটা ধক
করে উঠে।।
মোবাইলে আলো জ্বালিয়ে দেখি রাত
তখন ৩ টা বেজে ১৫ মিনিট।।
আমি খুব ভয়ে এবং সাবধানে আমার
বিছানা থেকে নেমে যাই।। রুম
থেকে বের হতেই
দেখি মামা আমাদের খাবার রুমের
জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।।
এই জানালা থেকে আমার রুমের
পাশের ছাদটা পরিষ্কার
দেখা যায়।।
দেখলাম মামা গভীর
মনোযোগে কি যেনও দেখছেন।।
আমি পা টিপে টিপে মামার
পাশে এসে দাঁড়াই।।
মামা আমাকে দেখে চমকে গেলেন।।
আমি বুঝলাম
না আমাকে দেখে মামা চমকালেন
কেন।। মামা আমাকে ঠোটে আঙ্গুল
দিয়ে কথা বলতে নিষেধ করলেন
এবং বললেন উঁকি না দিতে।। কিন্তু
ততক্ষণে আমি দেখে ফেলেছি যা দেখার।।
সেই ছাদে একটা লাশ পরে আছে।।
জবাই করা একটা লাশ।। মাথাটা ধর
থেকে আলাদা করা।। চাঁদের
আলোর
দেখা যাচ্ছে ছাদটা রক্তে ভিজে একাকার
হয়ে গেছে।। কিন্তু এর চেয়েও
ভৌতিক যেই ব্যাপারটা ছিল যে,
আমার জানালার
পাশে কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।।
লোকটা সাদা কাপড় পরিহিত।।
হাতে একটা লাঠি দিয়ে আমার
জানালায় আওয়াজ করছেন।। ঠকঠক
ঠকঠক।। কিছুক্ষণ থেমে আবার ঠকঠক।।
আমি লোকটার
আগা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখার
চেষ্টা করলাম।। এই এলাকায়
আমরা আছি আমার জন্মের পর
থেকে।। এলাকার প্রায় সবাইকেই
আমি চিনি।। যদিয়ও উনার
চেহারা দেখতে পাচ্ছিলাম না।।
তবে এতো লম্বা এবং দীর্ঘকায়
মানুষ
আমাদের এলাকায় নেই
তা আমি লিখে দিতে পারবো।।
যে ব্যাপারটা আরও বেশি আমাদের
ধাঁধায় গেলে দিলো, তা হল, ঠিক
১০
মিনিট পর সেই লোকটা হাওয়ায়
মিলিয়ে গেলো।। এবং প্রায়
সাথে সাথেই লাশটা।। মামা ঘোর
লাগা গলায় আমাকে জিজ্ঞেস
করলেন, “লাশটা এবং লোকটা কই
গেলো ?? কিছু বুঝলাম না।। তুই
কি যেতে দেখেছিস??”
আমি মাথা নাড়লাম।।
ঠিক ৩ দিন পর
আমরা বাড়িটা ছেড়ে দেই।।
ছেড়ে দিয়ে নতুন বাড়িতে উঠি।।
এরপর খোঁজ নিয়ে জেনেছিলাম, ঐ
বারিরি ছাদে নাকি অনেক
মানুষকেই এনে মেরে ফেলা হয়।।
কাউকে জবাই করে, কাউকে ছুড়ি,
চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে।। অনেক
লাশই
নাকি ছাদের পাশেই
ফেলে রেখে দেয়া হয় দীর্ঘকাল।।
এরপর মাটি চাপা দেয়া হয় কোনও
জানাজা ছাড়া।। অনেকেরই
ধারণা এগুলো সেই অভিশপ্ত আত্মা।।
সেই বাড়ির নতুন ভাড়াটিয়ার
একটা মেয়ে ২ মাস পর গলায় ফাস
নিয়ে মারা যায়।। মেয়েটা আমার
রুমেই থাকতো, অর্থাৎ ছাদের
পাশের
রুমটায়।।
এই ঘটনার কোনও ব্যাখ্যা আমার
কাছে নেই।।

Tuesday, 14 October 2014

মৃত্যু রহস্য

বছরখানেক আগের ঘটনা।। আমাদেরই
এক বন্ধু সিহাব গিয়েছিলো তার
গ্রামের বাড়ি শ্রীপুরে।। সেখান
থেকে এসে সে আমাদের এক
রোমহর্ষক ঘটনা শোনালো।।
ঘটনাটা ঐ গ্রামের এক
মাঝবয়সী লোককে নিয়ে।। উনার নাম
ছিল মন্নান মিয়াঁ।।
ছিলো বলছি কারন লোকটা এখন
জীবিত নেই।। সে যাই হোক,
আমাদের এই ঘটনার মূল অংশ মন্নান
মিয়াঁকে নিয়ে।। মন্নান
মিয়াঁ শ্রীপুর গ্রামের স্থানীয় কেউ
নন।। বছর পাঁচেক
আগে গ্রামে এসেছিলেন
ঘুরতে ঘুরতে।। এরপর গ্রামের লোকজন
তাকে পছন্দ করে ফেলে।। একটা ঘরও
তুলে দেয়া হয় তার জন্য।। লোকটা খুবই
মিশুক প্রকৃতির ছিল।।
কারো যেকোনো সাহায্যে তাকে ডাকলেই
সাড়া দিতো।। গত ২০০৯ সালের
গ্রীষ্মের এর দুপুরে মন্নান
মিয়াঁ মারা যায়।।
লোকমুখে শোনা যায়, ঐদিন বাজার
করে এসে মন্নান হটাৎ করে অসুস্থ
হয়ে পড়ে।। বারবার বলতে লাগে,
রাস্তায় তার সাথে খুব খারাপ কিছু
হয়েছে।। কিন্তু সেই খারাপ
কিছুটা কি তা সে পরিষ্কার
করে বলতে পারেনি।। তার আগেই
সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।। তার
লাশ সেদিনই দাফন করে দেয়া হয়।।
গ্রাম্য রীতি অনুযায়ী, মানুষজন
তাদের কবরস্থানে শুধু নিজেদের
ফ্যামিলি মেম্বারদের জন্যই
জায়গা রাখেন।। মন্নানের সেই
গ্রামে কোন পরিচিত ছিল
না বিদায় তার কবর দেয়া হয় রাস্তার
পাশেই একটা বেল গাছের নিচে।।
তার মারা যাওয়ার কারন কেও
আবিস্কার করতে পারেনি।।
হয়তো পারেনি।।
আমি হয়তো বলছি কারন মূলত এখান
থেকেই আমাদের কাহিনী শুরু
হতে যাচ্ছে।।
আমার এক বন্ধুর নাম জাবেদ।। আমাদের
মাঝে ও বলতে গেলে দুঃসাহসী।।
জীবনের একটা বড় সময়
সে প্যারানরমাল
একটিভিটি নিয়ে গবেষণা করে কাটিয়ে দিয়েছে।।
বেচারার খুব কষ্ট যে, জিন-ভুত কিছুই
কখনও তার দেখা হয়নি।। সিহাবের
কাছে ঘটনাটা শুনেই
সে লাফিয়ে উঠলো।। যে করেই হোক
তাকে সেখানে জেতেই হবে।। এর
পিছনে একটা বড় কারন ছিল
সিহাবের শেষ কথাটি।। মন্নান
মিয়াঁর কবরের রাস্তায় নাকি প্রায়ই
রাতের
বেলা কাউকে বসে থাকতে দেখা যায়।।
কয়েকজন তো হলপ
করে বলেছে তারা মন্নান
মিয়াঁকে দেখতে পেয়েছে।।
এরচেয়ে ও ভয়ঙ্কর ব্যাপার হল, মন্নান
মিয়াঁর কবরের উপর
নাকি একটা কুকুরকে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।।
কুকুরটা কোথা থেকে আসে, রাত
শেষে কোথায় যায়, তা আজও কেউ
জানতে পারেনি।। এমনকি দিনের
বেলা কুকুরটাকে কেউ কখনো দেখেও
নি।।
প্রতি পূর্ণিমা রাতে কুকুরটা মন্নান
মিয়াঁর কবরের পাশে বসে কাঁদে।।
যারা রাতের বেলা গ্রামের
বাজার থেকে আসেন
তারা অনেকেই ঐ
কুকুরকে দেখেছেন।। মন্নান মিয়াঁর
কবর যেই রাস্তায় ঐ রাস্তাটা এখন
প্রায় বন্ধের উপক্রম।। এই কথাগুলোই
আসলে জাবেদের মাথাটা খারাপ
করে দিলো।। সিহাবের এক কথা।।
সে কোন অবস্থাতেই জাবেদ
কে নিয়ে যাচ্ছে নাহ।। জাবেদ
অনেকটা নাছোড়বান্দা পাবলিক।।
অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে শেষমেশ
সিহাবকে রাজি করলো যাওয়ার
ব্যাপারে।। আমার নিজেরও যাবার
ইচ্ছে ছিল, কিন্তু সেই সময় মিডটার্ম
পরীক্ষা চলছিলো দেখে যাওয়া সম্ভব
হয়নি।। যাই হোক, জাবেদের প্ল্যান
ছিল পূর্ণিমা রাতে উক্ত
স্থানে উপস্থিত থাকা।।
এতে কুকুরটার দেখা পাওয়া যাবে,
পাশাপাশি ছবি তোলার জন্য
ভালো আলোও থাকবে।।
বাংলা ক্যালেন্ডার দেখে সময়
নির্ধারণ করে রওনা দিলো তারা।।
তারা মানে, জাবেদ আর সিহাব।।
সাথে আর ২জনের যাওয়ার কথা ছিল,
কিন্তু শেষ মুহূর্তে ২ জনই যাওয়া বাদ
করে দেয়।। পারিবারিক কিছু
ঝামেলার কারনেই ২জনের
যাওয়া বাতিল হয়ে যায়।। সে যাই
হোক, জাবেদরা নির্দিষ্ট সময়েই
গ্রামে পৌঁছায়।। আদর
আপ্যায়নে তাদের বরন করে নেয়
সিহাবের আত্মীয়স্বজনরা।।
মোটামুটি ফ্রি হবার পর জাবেদ,
সিহাবের ছোট
কাকাকে খুলে বলে আসার আসল
উদ্দেশ্য।। শুনে ছোট
কাকা কিছুটা গম্ভির হয়ে যান।।
শেষমেশ জাবেদ আর সিহাবের প্রবল
অনুরোধের মুখে নতি স্বীকার
করতে হয় তার।। যাওয়ার অনুমতি দেন
তিনি কিন্তু সাথে তার
দেয়া পরিচিত
একজনকে নিয়ে যেতে হবে।। জাবেদ
চাচ্ছিল একাই যেতে।। কারন এইসব
ব্যাপারে বেশি মানুষ
থাকলে নাকি “প্যাঁচ”
লেগে যেতে পারে।। কিন্তু ছোট
কাকার শর্ত একটাই।। হয় সাথে তার
দেয়া গাইড
যাবে নাহলে যাওয়া বাতিল।।
অগত্যা জাবেদকে রাজি হতেই হল।।
সেদিন ছিল রবিবার।। সন্ধার পর পরই
আকাশ উজ্জ্বল করে পূর্ণিমার চাঁদ
উঠলো।। চাঁদের
আলোতে চারপাশে যেনও
আলোকিত হয়ে উঠলো।। বিপত্তি শুরু
হল ঠিক তখনি।। সিহাব
তাড়াহুড়ো করে বের
হতে গিয়ে দরজার
চৌকাঠে ধাক্কা খেলো।।
সাথে সাথে মাথা ধরে বসে পড়লো।।
হাত সরাতেই
দেখে গেলো ফিনকি দিয়ে রক্ত
বেরুচ্ছে।। বাসা ভরতি মানুষের
মধ্যে হট্টগোল বেঁধে গেলো।।
একে তো গ্রাম অঞ্চল, তার উপর এখনও
ফ্রিজ জিনিসটা এতোটা জনপ্রিয়
হয়ে উঠেনি।।
সিহাবকে ধরাধরি করে নলকূপের
পাড়ে নিয়ে যাওয়া হলে।। প্রায় ২০
মিনিট লাগলো রক্ত বন্ধ হতে।।
এদিকে জাবেদ
তো টেনশনে মারা যাচ্ছে।।
শেষমেশ বুঝি যাওয়াটাই বাতিল
হয়ে গেলো!! ঐ অবস্থায় সিহাবের
পক্ষে যাওয়া একদমই সম্ভব ছিল নাহ।।
কিন্তু জাবেদ কাকাকে বলে তার
নিজের যাওয়া নিশ্চিত
করে নিলো।। সাথে থাকবে গাইড
রতন আলী।। (অনেকেই হয়তো ভ্রু
কুঁচকাতে পারেন যে, চেনা নেই
জানা নেই একটা ছেলেকে ঐ
অবস্থায় তার
বাসা থেকে কিভাবে বের
হতে দিলো?? তাও যখন
ছেলেটা তাদের অথিতি।। ভাই,
জাবেদকে আমি চিনি।।
সে যদি বলে সে যাবে তাহলে তাকে আটকানো কারো পক্ষেই
সম্ভব নাহ।। এমনকি সে তখন নিজের
বাবা মার কথাও শুনবে নাহ।।)
রতন আলী ঐ গ্রামের
সবচেয়ে সাহসী মানুষদের
মাঝে একজন।। ছোট
কাকা রতনকে বুঝিয়ে দিলেন যেনও
কোন অবস্থাতেই
জাবেদকে ফেলে চলে না আসে।।
গ্রামে ছোট কাকার
ভালো প্রতিপত্তি ছিল।। রতন
আলী নিজের বুকে চাপর দিয়ে বলল,
সে কাউকে ভয় করে নাহ।। ভুতের ভয়
তার নেই।। বরং শহুরে ভাইয়ের
সাথে সেও আজকে দেখবে কিসের
ভূত, কার ভূত!!
রতনের
হাতে একটা ব্যাটারি চালিত টর্চ
লাইট।। জাবেদ ঢাকা থেকেই
একটা শক্তিশালী টর্চ আর
একটা ভালো মানের ডিজিটাল
ক্যামেরা নিয়ে যায়।।
ক্যামেরাটা গলায় ঝুলিয়ে,
টর্চটা হাতে নিয়ে হাঁটতে লাগে সে।।
পাশেই রতন আলী।। রতন
তাকে গ্রামের বিভিন্ন
ঘটনা জানাতে লাগলো।। কোন
বাড়ির কে কবে কার হাতে খুন
হয়েছে, কে কোথায় ফাঁস
নিয়ে মারা গেছে এইসব।।
জাবেদের বিরক্ত আর ভয় দুটোই
লাগছিল( ভয় লাগার
ব্যাপারটা আমার অনুমান, কারন
সে যখন গল্পটা বলছিল তখন বলেছিল
তার শুধু বিরক্ত লাগছিল আর অদ্ভুত
একটা অনুভুতি হচ্ছিল।।
আমি ধরে নিয়েছিলাম সেই
অনুভূতিটা ভয়)।।
বাড়ি থেকে জায়গাটার দূরত্ব ২
মাইলের মত।। গ্রামের নিরবতায়
নাকি ভূত দেখার
টেনশনে কে জানে, জাবেদের
ভীষণ বাথরুম চাপল।। রতন
আলীকে সে টর্চটা ধরতে বলে নিজে গেলো একটা গাছের
নিচে প্রকৃতির
ডাকে সাড়া দিতে।। কাজ শেষ
করে ফিরে এসে তারা আবার
হাঁটতে লাগলো।। কিছুক্ষণ চুপচাপ
হাঁটার পর হটাৎ রতন আলী জাবেদ
কে জিজ্ঞেস করে বসলো, মন্নান
মিয়াঁ সম্পর্কে কতটা কি জানে সে।।
জাবেদ একটু চমকে গেলো।। কারন
কিছুক্ষণ আগে যেই গলায় রতন
আলী কথা বলছিল তার
সাথে এখনকার
গলা যেনও একটু অমিল লক্ষ্য করা যায়।।
তবে ঘাবড়ে না গিয়ে সে বোঝার
চেষ্টা করলো ব্যাপারটা কি আসলেই
তাই নাকি তার দুর্বল মনের চিন্তা।।
জাবেদ মন্নান
মিয়াঁ সম্পর্কে যা জানত তা বলল রতন
আলীকে।। শুনে রতন আলী কিছুক্ষণ চুপ
করে থেকে বলল,
“মন্নান
মিয়াঁ কেমনে মারা গেছে জানতাম
চান??” (রতন আলীর কথা গুলো গ্রাম্য
ভাষায় লেখা হল, আমি যখন
গল্পটা শুনছিলাম তখন জাবেদও রতন
আলীর কথা গুলো গ্রাম্য টানেই
বলছিল।। এটা একটা রহস্য।। কারন
জাবেদ ঐ গ্রামে মাত্র ২দিন ছিল।।
তার পক্ষে এত
ভালো ভাবে ভাষাটা রপ্ত
করা সম্ভব নাহ।। যাকগে,
আমরা গল্পে ফিরে যাই)
জাবেদ কিছুটা অবাক হয়ে বলল,
“কিন্তু সবাই যে বলে মন্নান মিয়াঁর
মৃত্যুর কারন কেউ জানে নাহ!!”
রতনঃ “তারা জানে নাহ।। কারন
মন্নান তাগর কাউরেই কইতাম চায়
নাই।।”
জাবেদঃ “তাহলে তুমি কিভাবে জানো??”
রতনঃ “মন্নান আমার খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড
আছিল।।”
“মরার আগে কি তোমার সাথে তার
কথা হয়??”
কিছুক্ষণ চুপ থেকে রতন
বললঃ “আপনি আসল
ঘটনা জানে চান??”
জাবেদের এই প্রথম গায়ে একটু
কাঁটা দিয়ে উঠলো।। তবুও সে উত্তর
দিলো, “হ্যাঁ,
তুমি যদি জানো তাহলে বলতে পারো।।
আমার নিজেরও এটা জানার খুব
ইচ্ছে।।”
(এরপর রতন আলী জাবেদকে যা বলল
তা আমি একটু সাজিয়ে লিখার
চেষ্টা করলাম)
যেদিনের ঘটনা সেদিন
সকালে মন্নান মিয়াঁ তার সপ্তাহের
বাজার করতে যায়।।
বাজারে পরিচিত মানুষজনের
সাথে দেখা সাক্ষাত
করে এবং নিজের প্রয়োজনীয়
জিনিসপত্র কিনে সে রওনা হয়
বাসার দিকে।। পথিমধ্যে একটা কবর
পড়ে ঐ রাস্তায়।। অনেকেই বলে ঐ
কবরে নাকি মাঝে মাঝে এক
বৃদ্ধকে দেখা যায়।। আবার
অনেকে বলে ঐ কবর থেকে রাতের
বেলা নানা রকম আওয়াজ আসে।।
কে বা কারা কান্না করে, সেই
আওয়াজ নাকি পাক
খেয়ে খেয়ে বাতাসে ভাসে।।
মন্নান মিয়াঁ এইশব ব্যাপারে তেমন
পাত্তা দিতো নাহ।। সেদিন আসার
পথে হটাৎ তার ভীষণ তৃষ্ণা পায়।।
তার বাজারের ব্যাগ থেকে বোতল
বের করে পানি খাওয়ার জন্য
রাস্তার পাশেই বসে পড়ে সে।। এমন
সময়ে একটা কালো কুকুর এসে তার
পাশে বসে।। কুকুরটা দেখে একটু অবাক
হয় মন্নান মিয়াঁ।। গ্রামে অনেকদিন
যাবত আছে সে কিন্তু
আগে কখনো এতো বড় কালো কোন
কুকুর দেখেনি।। কুকুরটা মন্নানকে এক
দৃষ্টিতে দেখতে থাকে।। হটাৎ
মন্নানকে অবাক
করে দিয়ে বলে উঠে, “আমার কবরের
পাশে বসে আছিস।। তোর সাহস
তো অনেক বেশি দেখছি।।” মন্নান
প্রথমে ভাবল তার শোনার ভুল।।
সে ব্যাগ থেকে পানি বের
করে চোখে মুখে পানি দিলো।।
এইবার সে আর স্পষ্ট
শুনতে পেলো কুকুরটা বলছে, “কিরে,
ভয় পেলি নাকি??”
মন্নান মিয়াঁ এইবার
পুরো ঘাবড়ে গেলো।। অনিশ্চিত
বিপদের আশঙ্কায় সে তার হাতের
পাশে পড়ে থাকা একটা গাছের
ডাল নিয়ে ছুড়ে মারল কুকুরটার
দিকে।।
ডালটা সরাসরি গিয়ে লাগলো কুকুরটার
মুখে।। একপাশ কেটে গিয়ে রক্ত বের
হতে লাগলো।। প্রচণ্ড
রাগে গর্জে উঠলো কুকুরটা।। স্পষ্ট
ভাষায় মন্নান কে বললঃ “তুই
আমাকে আঘাত করেছিস।। এর
পরিনাম তুই ভোগ করবি।।” এই
বলে কুকুরটা ভয়ঙ্কর গর্জন করে মন্নান
কে কামড়াতে আসলো।। কুকুরটার
সাথে ধাক্কা লাগার
সাথে সাথে মন্নান জ্ঞান
হারিয়ে ফেলে।।
জ্ঞান হারান অবস্থায় মন্নান
স্বপ্নে দেখে এক বুড়ো লোককে।।
লোকটি প্রবল
ঘৃণা নিয়ে তাকিয়ে আছে মন্নানের
দিকে।। মন্নান কে উদ্দেশ্য
করে বলতে লাগলো, “তুই আমার
গায়ে হাত তুলেছিস।।
আমাকে আঘাত করেছিস।। এর
পরিনাম মৃত্যু।।”
মন্নান ভয়ে জড়সড়
হয়ে বললঃ “আমি জানি না আপনি কে।।
আপনাকে আমি আমার
জীবনে আগে কখনো দেখিনি।।
আমি কিভাবে আপনাকে আঘাত
করবো??”
তখন লোকটি নিজের বর্ণনা দিল।।
“তান্ত্রিক” এই ব্যাপারটার
সাথে হয়তো আমরা অনেকেই
পরিচিত।। তান্ত্রিক তাদের
বলে যারা তন্ত্র মন্ত্র নিয়ে থাকে।।
এরা প্রায়ই গোরস্থান,
শ্মশানঘাটে রাত্রি বেলা কালো জাদু
চর্চা করে।। তান্ত্রিক মূলত খারাপ
প্রকৃতির হয়।। এরা ক্ষমতার লোভে,
বলতে পারেন অমরত্তের
লোভে এমনকি মানুষ খুন
করে তা দিয়ে তপস্যা করে।। ঐ
লোকটি একজন তান্ত্রিক ছিল।। একবার
মানুষ খুন করার
অভিযোগে তাকে গাছের
সাথে ফাঁস দিয়ে মারা হয়।। এরপর
তাকে কবর দেয়া হয় গ্রাম
থেকে দূরে একটা বধ্য এলাকায়।। সেই
কবরটির কথাই একটু
আগে আমরা বলেছিলাম।। যাই হোক,
সেই তান্ত্রিক মারা যাওয়ার পরও
তার আত্মা এখনও মানুষের ক্ষতি করার
জন্য ঘুড়ে বেড়ায়।।
তান্ত্রিকটা মন্নানের সামনে কুকুর
বেশে এসে বসেছিল এবং মন্নান
তাকে আঘাত করায় সে ভীষণ ক্ষুব্ধ
হয়।।
এরপর হটাৎ মন্নানের ঘুম ভেঙ্গে যায়।।
সে খুব খারাপ অনুভব করতে থাকে।।
তার
নিঃশ্বাসে সমস্যা হতে থাকে।।
সেখান থেকে কোনোরকমে বাসায়
যায় মন্নান।। এরপর আস্তে আস্তে মৃত্যুর
কোলে ঢলে পড়ে।।
রতন আলী এতটুকু পর্যন্ত বলার পর হটাৎ
কর্কশ শব্দে কাছেই কোথাও
একটা পেঁচা ডেকে উঠে।। ঠিক
সাথে সাথে চমকে উঠে জাবেদ
শুনতে পায়, রতন আলী তাকে পিছন
থেকে ডাকছে।। “ঐ ভাইজান,
জলদি লন।। মুত্তে অতখন লাগায়
নি কেও??”
জাবেদ ঘাড়
ঘুড়িয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখে অস্থির
চিত্তে অপেক্ষা করছে রতন আলী।।
আর সে নিজেকে আবিষ্কার
করে সেই গাছটার নিচে,
যেখানে সে প্রকৃতির
ডাকে সাড়া দিতে এসেছিলো।।
আমাদের গল্প এখানেই শেষ।। এখন
আপনাদের কিছু কমন প্রশ্নের উত্তর
দেয়ার চেষ্টা করবো।।
প্রশ্নঃ সেদিন
আসলে কি হয়েছিলো??
উত্তরঃ সেদিন
কি হয়েছিলো তা আমি বলতে পারব
নাহ।। একেজনের একেক রকম ধারণা।।
সম্ভবত মন্নান
মিয়াঁ এসে জানিয়ে দিয়ে গিয়েছিলো তার
মৃত্যু রহস্য।। হয়তো বা এটা জাবেদের
বিক্ষিপ্ত মনের কল্পনা।।
প্রশ্নঃ জাবেদ কি তারপর ও
কবরটা দেখতে গিয়েছিলো??
উত্তরঃ জী নাহ।। জাবেদ সেই
গাছের নিচেই
মাথা ঘুরে পড়ে যায়।। রতন
আলী তাকে কাঁধে করে বাসায়
নিয়ে আসে।।
প্রশ্নঃ জাবেদের এরপর কি হল??
উত্তরঃ জাবেদ এরপর একটানা ৪মাস
অসুস্থ ছিল।। ডাক্তারদের ধারণা তার
মেণ্টাল ব্রেক ডাউন হয়েছিলো।। ৪
মাস পর জাবেদ হসপিটাল
থেকে ছাড়া পায়।।
প্রশ্নঃ মন্নান মিয়াঁর কবরটা কি এখনও
আছে??
উত্তরঃ জী, কবরটা বহাল
তবিয়তে আছে।। যদিও এই ঘটনার পর
কবরের পথ তা বন্ধ
করে দেয়া হয়েছে এবং এরপর
কোনোদিন কবরের কুকুরটাকেও আর
দেখা যায়নি।। তবে এখনও
মাঝে মাঝে পূর্ণিমা রাতে তার
কান্নার আওয়াজ পাওয়া যায়।।
প্রশ্নঃ তান্ত্রিক লোকের কবরটার
কি হল??
উত্তরঃ সেই
কবরটা নিয়ে আগে থেকেই মানুষের
মধে এক ধরনের আতঙ্ক ছিল।। এই ঘটনার
পর তা আরও বেড়ে যায়।।
পড়ে শুনেছিলাম
কবরটা মাটি দিয়ে বন্ধ
করে দেয়া হয়েছে এবং ঐ রাস্তাটুকু
বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।।